ফুলচাঁন ত্রিপুরা ও মহিন উদ্দিন:
সীতাকুণ্ড উপজেলার ৮নং সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শীতলপুর ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা চরম অবহেলিত জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন পর্যন্ত বিন্দুমাত্র সহযোগিতার ছোঁয়া লাগেনি এ অবহেলিত শীতলপুর ত্রিপুরা পল্লীতে। নেই কোন রাস্তা ঘাট, টিউবওয়েল, পুকুর ও খাল কিংবা নালা। এমনকি বিদ্যুৎ কি সেটাও জানে না এখানকার হতদরিদ্র ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। যেখানে নুন আনতে পান্তা পোরায় সেখানে শিক্ষার কোন কথাই আসে না এমন ধারণা তাদের।
জীবনধারণের জন্য তাঁদের জুমচাষ, বন থেকে গাছ-বাঁশ সংগ্রহ করে বিক্রি ও দিনমজুরির ওপর নির্ভর করতে হয়। বর্তমানে তাও করার কোন সুযোগ নেই তাদের। কারণ সরকার বন বিভাগের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সংরক্ষণ করার জন্য সামাজিক বনায়ন বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রভাবশালীদের কাছে লিজ দেওয়া, পর্যটনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার ফলে প্রাকৃতিকভাবে জুমচাষের জমির পরিমাণ ক্রমাগতভাবে কমে আসছে।
শীতলপুর ত্রিপুরা পাড়ায় এমনিতেই পানি ও খাদ্যসংকট দেখা দিচ্ছে। এর ওপরে যখন জুমভূমি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন তাদের দুর্দশার পরিসীমা থাকে না।এতেই পাড়ার মানুষের জীবন-জীবিকার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
এতে মানুষগুলো শুধু খাদ্যসংকটে পড়ছেন না, ভূমি ও বসতি থেকে উচ্ছেদ হয়ে প্রান্তিক থেকে প্রান্তিকতর হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। সরকারি সহায়তা তাদের কাছে পৌঁছেনি। অথচ তাঁদের অনেককেই জঙ্গলের লতাপাতা খেয়ে জীবনধারণ করতে হচ্ছে।
যেখানে বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ছাড়া একটি পরিবারও থাকবে না এমন ঘোষণার পরও আলোর ছোঁয়া লাগেনি এ ত্রিপুরা পাড়ায়।
এখন তাদের একটাই চাওয়া সুপেয় পানি আর রাস্তা-ঘাট হলেই কিছুটা দুঃখ লাঘব হবে এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সুনজর কামনা তাদের।